রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

প্রেমের কারণে ধ্বংস হলো ভারতের এই সম্রাটের সাম্রাজ্য

 বাজ
বাহাদুর-রূপমতীর প্রেমর শহর



মধ্যপ্রদেশ
রাজ্যের মালওয়া প্রদেশের ধার জেলার ঐতিহাসিক শহর হল মাণ্ডু।
যা ইনদওর
থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে বিন্ধ্য পর্বতের খাড়াই ঢাল বেয়ে বিস্তৃত।
মণ্ডপ শব্দের প্রাকৃত রূপ মাণ্ডু। একাদশ
শতকে মাণ্ডু ছিল তরঙ্গগড় বা তরঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত। অবশ্য তারও আগে
, খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে মাণ্ডু
ছিল সমৃদ্ধ জনপদ।

দেশ জুড়ে প্রতিবাদী আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে সেই
সময়।

সেই সময়ে একটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়েছে মাণ্ডু
থেকে ১০০ কিমি দূরে তালনপুর খেকে।
সেখানে বলা হয়েছে, মণ্ডপ বা মাণ্ডুর এক দুর্গে পার্শ্বনাথের মূর্তি স্থাপন করেছেন
চন্দ্র সিংহ নামে জনৈক বণিক। এই
মাণ্ডু থেকেই নগরীর নামকরণ। ১৩০৫ খ্রিস্টাব্দে এই
নগরী জয় করেন দিল্লির তৎকালীন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি।



আফগান
শাসক দিলাওয়ার খান ছিলেন মালওয়ার শাসক। তাঁর ছেলে হোশাং শাহ তাঁর রাজধানী সরিয়ে
নিয়ে যান ধার থেকে মাণ্ডুতে।
এর পর দীর্ঘ কয়েক দশক মাণ্ডুর শাসনভার ছিল
খিলজি বংশের একটি শাখার হাতে। মহম্মদ খিলজি এবং তাঁর ছেলে গিয়াসুদ্দিন খিলজির
সময়কে বলা হয় মাণ্ডুর স্বর্ণযুগ।
এর পর মাণ্ডু ঘিরে আফগান ও মুঘলদের মধ্যে
কয়েকশো বছর ধরে ক্ষমতার টানাপড়েন চলেছে। শেষ অবধি সম্রাট আকবর মাণ্ডু জয় করে
সংযুক্ত করেন মুঘল সাম্রাজ্যের সঙ্গে। তার পরেও মরাঠাদের হাতে গিয়েছে এই শহরের
শাসনভার।



তবে
এসবের মাঝে

মাণ্ডু বিখ্যাত হয়ে আছে বাজ বাহাদুর ও রানি
রূপমতীর প্রেম কাহিনীর জন্য।
বাজ বাহাদুর ছিলেন মাণ্ডুর শেষ আফগান
সম্রাট। তারপর এর ক্ষমতাভার চলে যায় মুঘলদের হাতে।বাজ বাহাদুর যুদ্ধবিগ্রহের থেকে
বেশি মগ্ন ছিলেন রানি রূপমতীকে নিয়ে। কথিত
, এক
বার শিকারে গিয়ে এক পশুপালক তরুণীর গান শুনে মুগ্ধ হন সম্রাট বাজ বাহাদুর। সেই
তরুণী-ই পরবর্তী সময়ের রানি রূপমতী। অন্য দিকে
, রানি
রূপমতী ছিলেন একজন কবি-ও।



তবে এই
প্রেমকাহিনির মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল।
মুঘলবাহিনীর আক্রমণে প্রাণ
হারিয়েছিলেন বাজ বাহাদুর। বিষপান করে আত্মঘাতী হন রানি রূপমতী।
মাণ্ডুর
আর এক বিস্ময়-স্থাপত্য হল জাহাজ মহল।
মাণ্ডুর নজর কেড়ে নেওয়া
স্থাপত্যের অন্যতম হোশাং শাহ ঘোরীর সমাধি।
তাঁর সমাধিস্থানের অনুসরণেই
পরবর্তীকালে নির্মিত হয়েছিল 
আগ্রার তাজমহল।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন