শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩

পৃথিবীতে থাকা একমাত্র নদী যার জলে রয়েছে রামধনু


 বিশ্বের একমাত্র রঙিন নদী

পৃথিবীতে এমন অনেক নদী আছে যার জল স্বচ্ছ। কিন্তু স্বচ্ছতার জন্য বিশ্বে একটি নদীকে রঙিন দেখায়। আর এটাই বোধহয় বিশ্বের একমাত্র রঙিন নদী। লাল, নীল, হলুদ, বেগুনী, কমলা- সব রঙ-ই রয়েছে এই নদীর জলে। পোশাকি নাম একটা থাকলেও রংবেরঙের জলের জন্য এই নদীকে কেউ বলেন রিভার অফ কালার্স বা রঙিন নদী, কেউ আবার লিকুইড রেনবো বা তরল রামধনু বলে চেনেন নদীটিকে। অনেকের কাছে এই নদী মেল্টেড রেনবো বা গলিত রামধনু। ক্যানিয়ো ক্রিস্টেলসের রংবেরঙের জল দেখার সবচেয়ে ভাল সময় জুলাই থেকে নভেম্বর।

এই নদী রঙিন হবার আসল রহস্য হল নদীর গর্ভে থাকা এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। নদীর জল এতটাই স্বচ্ছ যে, ওই উদ্ভিদের নানা রঙের প্রতিফলন দেখা যায় নদীর স্রোতে। সূর্যের আলোয় তা আরও ঝলমল করে ওঠে।জলে ডুবে থাকা সেই উদ্ভিদের নাম ম্যাকারেনিয়া ক্ল্যাভিগেরা। নদীখাতের নীচে হাজার হাজার বছরের পুরনো কোয়ার্টজ়াইট শিলাকে আঁকড়ে এই গাছের সংসার।নদীতে খুব বেশি জল থাকলে বা জলের পরিমাণ খুব কমে গেলে রংবেরঙের খেলা আর দেখা যায় না। কম জলে গাছ শুকিয়ে খয়েরি হয়ে যায়। আবার বেশি জল থাকলে নদীর নীচ পর্যন্ত দেখা যায় না। ফলে নদীতে রামধনুও হয়ে যায় গায়েব। কলম্বিয়ার সেরানিয়া দে লা ম্যাকারেনা অঞ্চলের নামকরণও হয়েছে এই উদ্ভিদের নামেই।

আশ্চর্য এই রঙের খেলা দেখতে হলে মধ্য কলম্বিয়ার ভিলাভেন্সিয়ো শহরে পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে আরও একটি বিমানে যেতে হবে লা ম্যাকারেনায়। লিকুইড রেনবো ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য সেখান থেকে মিলবে গাইড।সেরানিয়া দে লা ম্যাকারেনা অত্যন্ত নিরিবিলি একটি পাহাড়ি জনপদ। খুব বেশি মানুষ সেখানে থাকেন না। স্থানীয় কয়েকটি পর্যটন সংস্থা নদীটি পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখান। কোথাও কোথাও রঙিন জলে সাঁতার কাটার সুযোগও মেলে।

প্রকৃতির এই অপরূপ শোভাকে সংরক্ষণের বন্দোবস্তও করেছে কলম্বিয়া প্রশাসন। নদীর জলে বা তার নীচে থাকা গাছগুলির যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে এই এলাকায় পর্যটকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন