রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আইন, স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব কতখানি ?

 রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আইন, স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের ধারণার গুরুত্ব

এবারে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় আইন, স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের ধারণা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে আলোচনা করবো। সুদূর অতীতে গ্রিসের নগররাষ্ট্রগুলিতে সফিস্ট চিন্তানায়করা, রোমের স্টোয়িক দার্শনিকরা, প্লেটো ও অ্যারিস্টট্‌ল প্রমুখ এ সম্পর্কে তাঁদের মূল্যবান মতামত প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে উদারনীতিবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা, মার্কসীয় তাত্ত্বিকেরা এবং সাম্প্রতিককালে নয়া-উদারনীতিবাদীরা আলোচ্য বিষয়গুলির উন্নততর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সমাজবিজ্ঞানের একটি গতিশীল বিষয়রূপে রাষ্ট্রবিজ্ঞান একজায়গায় থেমে থাকতে পারে না, তাই আলোচ্য বিষয়গুলিকে নিয়ে চিরাচরিত ধারণা যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল রেখে পরিবর্তিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত বলা যায় আইন,স্বাধীনতা,সাম্য ও ন্যায়বিচার পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সার্বভৌমের আদেশকে আইন হিসেবে অভিহিত করেছেন, কিন্তু সেই সঙ্গে তাঁরা এ কথাও বলেছেন যে, আইন শুধুমাত্র রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত, ঘোষিত ও প্রযুক্ত হলেই চলবে না, তাকে ন্যায়সম্মত ও যুক্তিসংগত হতে হবে। অন্যদিকে সাম্য ছাড়া যেমন স্বাধীনতা অর্থহীন, তেমনি স্বাধীনতা ছাড়া সাম্যও নিরর্থক হয়ে পড়ে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সাম্যের বহু আগে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য দাবি ওঠে। প্রাচীন গ্রিসে এবং রোমে যখন দাসব্যবস্থার প্রচলন ছিল তখন সব মানুষকে সমান ভাবা হত না। যে-সময়ে সাম্যের চেয়ে স্বাধীনতার স্থান ছিল অনেক ওপরে। বস্তুতপক্ষে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রে (১৭৭৬) এবং ফ্রান্সের মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘোষণায় (১৭৮৯) সর্বপ্রথম সাম্য স্বাধীনতার সমন্বয় চিন্তা বাস্তবরূপ লাভ করে।



0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন