নীতিমূলক
উপাখ্যান
বিভাবসু-সুপ্রতিকের
উপাখ্যান
বিভাবসু
একজন ক্রোধপরায়ণ মুনি। শত্রুদের প্ররোচনায় তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা সুপ্রতীক পিতৃধন
বিভাগের জন্য বারংবার পীড়া-পীড়ি করতে থাকেন। বিভাবসু ভিন্ন হবার কুফল বোঝাতে বৃথাই
বহু চেষ্টা করেন এবং শেষ পর্যন্ত বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ হয়ে ভ্রাতাকে গজমূর্খের মতো
আচরণ করায় গজ হবার অভিশাপ প্রদান করেন। গজমূর্খ বলতে এখানে পণ্ডিত হয়েও
বুদ্ধিহীনের মতো আচরণের কথা বলা হয়েছে। সুপ্রতীকও তখন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাকে জল ও
স্থলের অর্থাৎ উভয় স্থানের অংশ দখলদার কচ্ছপের মতো আচরণকারী বিবেচনাপূর্বক কচ্ছপ
হবার জন্য পালটা অভিশাপ প্রদান করেন। এরই ফলস্বরূপ বিভাবসু ও সুপ্রতীক যথাক্রমে
বিশালাকায় গজ ও কচ্ছপরূপে বহুকালব্যাপী এক সরোবরের তীরে যুদ্ধরত হয়ে কালযাপন
করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত উভয়েই গরুড়ের গ্রাসে অর্থাৎ খাদ্যে পরিণত হয়ে মৃত্যুমুখে
পতিত হন।
এর
থেকে আমরা এই নীতিশিক্ষায় উপনীত হই:-
স্বার্থপর
মূঢ় ব্যাক্তিগণ বিনাশ্রমে ধন প্রাপ্ত হলে এমনই আত্মহারা হয়ে যায় যে, তাদের হিতাহিত জ্ঞানবুদ্ধি
লপ্ত হয়ে যায়।শত্রুপক্ষ তখন মিত্রভাবে তাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে আত্মবিচ্ছেদ ঘটিয়ে
দেবার উদ্দেশ্যে ক্রমাগত একের কাছে অপরের দোষ প্রদর্শন করে পরস্পরের মধ্যে ক্রোধ ও
শত্রুতার সৃষ্টি করে। এইরকম হলে তাদের সর্বদাই সর্বনাশ ঘটে।
এটি
মহাভারতের আদিপর্ব-এর গজ-কচ্ছপের বিবরণ থেকে নেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন