মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩

দুটি লাইব্রেরির সংযোগ গঠিত জাতীয় গ্রন্থাগার

 

শহর কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি

১৯৫৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি শহর কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি বা জাতীয় গ্রন্থাগার উদ্বোধন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ। আর বর্তমানে কলকাতার যে ভবনে এটি রয়েছে তার পূর্ব নাম হল বেলভিডিয়ার গার্ডেন হাউস। অবশ্য জাতীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পর্ব শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন দ্য ইংলিশম্যান পত্রিকার সম্পাদক জোয়াকিম স্টোকেলার ওরফে জোয়াকিম হেওয়ার্ডস সেডনস। মোট চব্বিশজন উদ্যোক্তার মধ্যে মাত্র দুজন ছিলেন বাঙালি। বাবু রসিককৃষ্ণ মল্লিক এবং বাবু রসময় দত্ত। তখন বলা হয়েছিল, ৩০০ টাকা অনুদান দিলে ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরি-র প্রোপাইটার হওয়া যাবে। প্রথম এই অনুদান দিয়ে প্রোপাইটার হয়েছিলেন দ্বারকানাথ ঠাকুর।

এরপর ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে। কিন্তু এই দুটি গ্রন্থাগারে-ই সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মী এবং অভিজাত শ্রেণীর মানুষ ছিলেন এই দুই গ্রন্থাগারের ব্যবহারকারী। তৎকালীন ভাইসরয় এবং গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জন এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চাইলেন তিনি দুটি আলাদা গ্রন্থাগারকে এক জায়গায় নিয়ে আসলেন এবং প্রতিষ্ঠা করলেন দ্য ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরি। একেবারে প্রথমে এটি শুরু হয়েছিল মেটকাফ হলে। ১৯২৩ সালে গ্রন্থাগারটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৬ এসপ্ল্যানেড ইস্ট ঠিকানায়।

১৯৪৮ সালে স্থির হল, বেলভিডিয়ার হাউস হবে ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরির স্থায়ী ঠিকানা, আর সেইসঙ্গে এর নতুন পরিচয় হল দ্য ন্যাশনাল লাইব্রেরি’ বা জাতীয় গ্রন্থাগার। ১৯৫৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন ভারতের সাধারণ মানুষের জন্য এর দরজা খুলে দেওয়া হল। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার কুড়ি লক্ষেরও বেশি বইয়ের সংগ্রহালয় এই গ্রন্থাগার। নেওয়া হয় প্রায় সাড়ে উনিশ হাজার পত্রিকা।

অবশ্য দেশের বাকি শহরেও জাতীয় গ্রন্থাগার আছে। কিন্তু ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের দিক থেকে অনেক এগিয়ে কলকাতার আলিপুরের বেলভিডিয়ার এস্টেটের এই গ্রন্থাগার। ৭২ বিঘা ৮ কাঠা ৪ ছটাক জমির মূল ভবন ছাড়া আরও কিছু ভবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জাতীয় গ্রন্থাগারের বিভিন্ন বিভাগ।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন