বুধবার, ২৪ মার্চ, ২০২১

তারকা প্রার্থী বা ফ্লিম স্টারেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কেন?

নমস্কার
পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বাসিন্দাদেরকে জানাই স্বাগত, আজ মূলত পশ্চিমবঙ্গকে
নিয়েই কয়েকটি কথা বললো যদিও বিষয়টি পুরো ভারতের অন্যতম সমস্যা।



একটি
প্রশ্ন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সেটা হলতারকা
প্রার্থী কি 
পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশের উন্নতি ঘটাতে পারবে? আরো ভালো ভাবে বলতে গেলে তারকা প্রার্থী বা ফ্লিম স্টারেরা
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কেন? কারণ তাদের অভাব নেই জনসংযোগের এমনকি অর্থেরও অভাব নেই।



পশ্চিমবঙ্গের
TMC-দলের নির্বাচনে 
জেতা সাংসদ রাজ চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন-যখন অন্য কোন প্রফেশন বা পেশা থেকে
লোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তখন তো কেউ প্রশ্ন
তোলে না, তাহলে সিনেমা জগত থেকে কেউ এলে -প্রশ্ন কেন
ওঠে?? প্রসঙ্গত রাজ চক্রবর্তী হলেন একজন চিত্র পরিচালক এবং তিনি কতকগুলি হিট সিনেমা আমাদের উপহারও দিয়েছেন।




প্রশ্নটি সত্যই প্রসঙ্গিক- অন্য পেশা থেকে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে কেন প্রশ্ন ওঠে না?? আসল কথা হল বাকি প্রায়
সমস্ত পেশাতে মানুষের সীমাবদ্ধতা থাকে কিন্তু সংস্কৃতি জগতে সেই সীমাবদ্ধতা থাকে না। একমাত্র সংস্কৃতি জগতের মানুষই ক্ষমতাসীন মানুষদের ভুল-ঠিকগুলি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারে। জগতে মূলত তিনটি পেশার মানুষদের হাতে সর্বদাই ক্ষমতা থাকে সমগ্র জনগনকে জগরিত করার; এই তিনটি পেশা
হল-সিনেমা বা রঙীন জগত
(
ছোট পর্দা বড় পর্দা),
সাংবাদিকতা এবং লেখক বা
লেখিকা।



এদের মধ্যে
সবচেয়ে জনপ্রিয় হল সিনেমা জগত বা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়। এই অভিনয়ের মাধ্যমেই
সমগ্র জগতের ক্ষমতাসীন ব্যাক্তিদের অন্যয়গুলি সাধারণ জনগণের সামনে প্রকাশিত হয়। আর
তার মাধ্যমে সাধারণ মানুষও নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে সমর্থ হয়। কিন্তু এই সব সিনেমা আর্টিস্টরা
যখন নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা নিজেদের হাতে তুলে নেন তখন সেই রাজনৈতিক দল
যদি কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয় আর তার প্রতিবাদ বা সেই সিনেমা সিনেমা আর্টিস্ট-এর প্রাসঙ্গিকতা
আর থাকে না। অর্থাৎ আর সঠিক অর্থে তাদের আর সিনেমা অর্টিষ্ট বলা যায় না।



এবার
যদি আমরা অন্য পেশার দিকে তাকাই তাহলে দেখা যাবে সেখানে জনগণকে সচেতন করার কোন রস্তা থাকে না। প্রথমেই আসি, শিক্ষকদের কথায় একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা সমাজকে
শিক্ষত করতে পারে কিন্তু জাগরিত করতে পারে না। কোন এলাকার মানুষ ভালোই অশিক্ষিত বা কম শিক্ষত
হতে পারে অথচ তারা সচেতন মানুষ হতে পারে, অর্থাৎ সরকার বা রাজনৈতিক দল
যদি কোন সিদ্ধান্ত নেন তাকে তারা বিচার বিবেচনা করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেন,ঠিক তেমনই উল্টো দিকে শিক্ষিত মানুষরা অন্ধত্ব হতে পারে অর্থাৎ সরকারকের সিদ্ধান্তের তারা সমালোচনা করতে ভুলে যায়। মানুষের শিক্ষার উপর কখনোই নির্ভর করে না তার সমালোচনা
করার ক্ষমতা বা তার সচেতনতার ক্ষমতা।
সুতরাং একজন শিক্ষক রাজনীতির মাধ্যমে সমাজকে আকর্ষিত করতে পারে এবং উন্নত সমাজ উপহার দিতে পরে।



আবার
একজন আইজীবী সমাজকে সংবিধান সম্পর্কে জাগরিত করতে পারে কিন্তু সামাজিক ভাবে জাগরিত করতে পারে না। আইন আর সমাজ একই
বিষয় নয়। আইন থাকে খাতায়-কলমে কিন্তু সামাজিক চিন্তা-ভাবনা থাকে মানুষের মনে। আর এই সামাজিক
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বড় ভূমিকা থাকে।
সুতরাং একজন আইজীবী রাজনীতির মাধ্যমে সমাজকে আইন সামাজিক রীতিনীতির
সম্পর্কের  কথা
তুলে
ধরেন।



সবচেয়ে
বড়কথা হল সিনেমা আর্টিষ্ট
ছাড়া আর কোন পেশায়
যুক্ত মানুষদের জনসংযোগ নেই। একমাত্র সিনেমা আর্টিষ্টদেরই জনসংযোগ রয়েছে আর এদের হাত
ধরে রাজনীতি তৈরী হয়নি। রাজনীতি তৈরী হয়েছিল শিক্ষক,ডাক্তার,উকিল এদের হাত ধরে।সবশেষে একটাই কথা সমাজব্যবস্থায় প্রত্যেকটি পেশার একটি নির্দিষ্ট গুরুত্ব আছে; বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলি সেই গুরুত্ব ধ্বংস করে দিতে চাইছে। সব জিনিসই যদি
রাজনীতিকরণ করতে শুরু করে দিই তাহলে কেউ ভুল করলে তাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে কে?? বা তাকে প্রশ্ন
করবে আপনি এটা কি ঠিক করেছেন??
অর্থাৎ রাজনীতির ঊর্ধ্বে আর চিন্তাভাবনা থাকবে
না।



এই
প্রশ্ন রইল ভারতবর্ষের প্রত্যকটি মানুষের কাছে।

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন