শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩

কলকাতার যেসব এলাকা ভুতুড়ে বলে কুখ্যাত, পর্ব-১



কলকাতার ভূতুড়ে এলাকা

১) কলকাতা হাইকোর্ট: নিস্তার রাউত ছিলেন এক জন যৌনকর্মী। যিনি শালিখরাম নামে এক
জন ব্যবসায়ীর প্রেমে পড়েছিলেন। তিনি এই কাজের কলঙ্ক থেকে দূরে সরে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন। যৌনকর্মীদের খাতা থেকে তাঁর নাম মুছে ফেলার জন্য
কলকাতা হাইকোর্টে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু সেই আর্জি অস্বীকার করা হয়েছিল। কয়েক
দিন পর পুলিশ নিস্তারের মৃতদেহ পায়। উদ্ধার হয়েছিল তাঁর শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা অবস্থায়। নগ্ন শরীরে কাপড়ের চিহ্নটুকু ছিল না
, পায়ে ছিল কেবল নূপুর। কলকাতা হাইকোর্টের দীর্ঘ অন্ধকার বারান্দায় এখনও নাকি শোনা যায় তাঁর নূপুরের ছনছন শব্দ এছাড়া কলকাতা হাইকোর্টের ১৩ নম্বর কোর্ট রুম। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড
দেওয়া হয়েছে এখান থেকেই। অনেকের দাবি
, এখনও গভীর রাতে রক্তাক্ত পা হেঁটে গিয়ে ঢোকে ওই কোর্টের রুমে।

২) হাওড়া ব্রিজ: ১৯৪৩ সালে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল হাওড়া ব্রিজ। কলকাতার গর্ব এই ব্রিজ শুধুমাত্র এর সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত নয়, ভুতুড়ে জায়গা বলেও পরিচিত এই হাওড়া ব্রিজ। বহু সময় বহু মানুষ হাওড়া ব্রিজ দিয়ে গঙ্গার জলে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ভোর ৩টে নাগাদ অনুশীলন করতে আসা কুস্তিগীরদের মধ্যে অনেকেই নাকি দেখেছেন জলের উপরে একটা ভাসমান হাত! কেউ ডুবে যাচ্ছে ভেবে সাহায্য করতে গিয়েছেন যাঁরা, তাঁরাও নাকি আর ফিরে আসেননি। এছাড়া, হাওড়া ব্রিজের নিচে মল্লিকঘাট ফুলবাজারের সামনের ঘাটেও ভূতের অস্তিত্ব টের পান অনেকেই। এখানে আবার সাদা শাড়ি পরিহিত মহিলা ভূত। যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁরা নাকি প্রতিদিন একটা না একটা ভৌতিক কাণ্ডকারখানার স্বাক্ষী থাকেন। আবার কখনও অনেকে দেখেছেন রাতে সাদা শাড়ি
পরা এক মহিলা হাওড়া ব্রিজের ওপর ঘুরে বেড়াচ্ছে। কখনও নাকি-সুরে কান্নার আওয়াজও
পান যাত্রীরা। তাঁদের ধারণা
, গঙ্গায় ডুবে কোনও মহিলার মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর আত্মাই এখন ঘুরে বেড়ায়।

৩) ভারতীয় জাদুঘর: কলকাতার একটা উল্লেখযোগ্য ভূতের বাড়ি হল, ইন্ডিয়ান
মিউজিয়ম। চৌরঙ্গি রোড বা এখনকার জওহরলাল নেহরু রোডের এই মিউজিয়ম-বাড়িটি তৈরি হয়েছিল ১৮৭৫-৭৮ সালে। ভৌতিক কাহিনি রয়েছে এই ভারতীয় জাদুঘর ঘিরে। স্পিক সাহেব
, শ্রমিকের মৃত্যু, এক সময়ের নাচঘর ছাড়াও সব থেকে ভয়াবহ গল্প যাকে ঘিরে, তা হল এখানে রাখা এক মিশরীয় মমি। এটি প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো। বহু রক্ষী নাকি তাকে রাতবিরেতে ঘুরতে দেখেছেন। আবার বেশ কিছু কর্মচারী নাকি শুনতে পেয়েছেন, আলতো পায়ে কে যেন হেঁটে যাচ্ছে সিঁড়ি দিয়ে। শিহরণ জাগানো দমকা বাতাস পাক খেতে থাকে এই মমিকে ঘিরে। তৈরি হয় এক গা ছমছমে পরিবেশ।

৪) রাইটার্স বিল্ডিং: রাত বাড়লে ফাঁকা রাইটার্সে নাকি আজও শোনা যায় পায়ের শব্দ, কান্নার আওয়াজ! ১৯৩০-এর ৮ ডিসেম্বর, প্রখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী বিনয়, বাদল এবং দীনেশ তৎকালীন ইনস্পেক্টর জেনারেল কর্নেল সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। এখানে অশরীরীর উপস্থিতির কথা শোনা যায় বিশেষত পঞ্চম ব্লকে, অর্থাৎ যেখানে সিম্পসনকে হত্যা করা হয়েছিল। সন্ধ্যার পরে এখনও সচরাচর কেউ থাকতে চায় না এখানে।

৫) পার্কস্ট্রিট কবরখানা: গোরস্থানে সাবধান! দিনের বেলায় এই স্থান প্রেমের হলেও নাকি
রাত হলেই হয়ে ওঠে ভয়াবহ। এই কবরখানা ঘিরে রয়েছে নানা অদ্ভুত গল্প। আত্মাদের ফিরে আসার অলৌকিক ঘটনা
ব্রিটিশদের কান্না নাকি হাড় হিম করে তোলে। কান পাতলে নাকি আজও শোনা যায় মানুষের আর্তনাদ। এখানে প্রথম কবরটি দেওয়া হয় ১৭৬৭ সালে।

দ্বিতীয় পাতা

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন