শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

রেললাইন, ইঞ্জিন, মোবাইল টাওয়ার থেকে রাস্তা-এসবই চুরি হয়েছে বিহারে

 এসব অদ্ভুত জিনিস চুরি সম্ভব বিহারে

বিহারে গত রবিবার উদ্ধোধন হবার আগেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে নদী গর্ভে মিলিয়ে গেলো দুটি কংক্রিটের পিলার এবং অজস্র ধাতব তারের ভরে ঝুলে থাকা একটি গোটা সেতু।আর এই ঘটনাই নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছে বিহারে হওয়া এমনই আরও অনেক অদ্ভুত চুরির কথা, যা আমরা বাঙালিরা কখনোই ভাবতে পারি না। এই অদ্ভুত চুরির তালিকাটা বেশ দীর্ঘ।

এক, উদ্বোধনের আগেই ভাঙল সেতু শেষ ডিসেম্বরেও আরও একটি সেতু ভেঙে পড়েছিল বিহারে। বেগুসরাইয়ের বুড়ি গন্ডক নদীর উপর সেই সেতুটি সদ্য তৈরি করা হয়েছিল। দিন কয়েক পরেই উদ্বোধন হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু তত দিন পর্যন্তও দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ওই সেতু। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের নাবার্ড প্রকল্পে তৈরি ওই সেতুটি বানাতে খরচ হয়েছিল ১৩ কোটি টাকা। ২০৬ মিটার দীর্ঘ ওই সেতু চালু হয়ে যাওয়ার পর ভাঙলে বড় বিপর্যয় হতে পারত। আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণও হারাতে পারতেন বহু বিহারবাসী।

দুই, রাস্তা চুরি সাতসকালে উঠে দেখলেন, বাড়ির সামনে বড় রাস্তাটি উধাও। প্রায় দুকিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা পাশাপাশি দুটি গ্রামকে জুড়ত। কিন্তু রাস্তার চিহ্নমাত্র নেই সেখানে। তার জায়গা নিয়েছে এক বিস্তৃত কৃষিক্ষেত্র। বিহারের বাঁকা জেলার রাজৌরি ব্লকের বাসিন্দারা চমকে গিয়েছিলেন দেখে। রাতারাতি দুকিলোমিটার রাস্তা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা আগে কখনও শোনননি তাঁরা। অনেক পরে জানা যায় রাস্তা চুরি করেছে একদল দুষ্কৃতী। ওই রাস্তার জায়গায় কৃষিক্ষেত্র বানিয়ে তাতে শস্যের বীজও বুনে দিয়ে গিয়েছিল তারা।

তিন, মোবাইল টাওয়ার চুরি একটা আস্ত মোবাইল টাওয়ারও চুরি গিয়েছিল বিহারে। মুজফ্ফরনগরে ঘটেছিল ঘটনাটি। এক রাতের মধ্যেই চোরেরা এলাকা থেকে গায়েব করে দিয়েছিল টাওয়ারটিকে। কিন্তু কী ভাবে মোবাইলের টাওয়ার চুরি করা হল, তা ভেবেই পাচ্ছিলেন না এলাকার বাসিন্দারা।পরে পুলিশ জানায়, টাওয়ারের ছোট ছোট অংশ খুলে সেগুলিকে পিক আপ ভ্যানে ভরে নিয়েছিল চোরেরা। প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতি ছিল তাতে। মোবাইল টাওয়ারের পাশাপাশি একটি জেনারেটর সেট, শেল্টার আর স্টেবিলাইজারও নিয়ে গিয়েছিল চোরেরা।

চার, লোহার সেতু চুরি একটা আস্ত সেতুও চুরি করেছিল বিহারের চোরেরা। ৬০ ফুট দীর্ঘ লোহার তৈরি একটি ব্রিজ বেমালুম হাওয়া হয়ে গিয়েছিল এলাকা থেকে। সেই চুরি আবার হয়েছিল দিনের আলোয়।নিজেদের সরকারি সেচ দফতরের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে লোহার সেতুটিকে এলাকাবাসীর চোখের সামনে দিয়ে খুলে নিয়ে যায় চোরেরা। সরকার এই চুরির ব্যাপারটি বুঝে ওঠার আগেই সেতু নিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায় চোরেরা।

পাঁচ, রেললাইন চুরি দুকিলোমিটার রেললাইনও বিক্রি করে দিয়েছিল চোরেরা। এটিও বিহারেরই ঘটনা। সমস্তিপুরের ওই রেললাইন আবর্জনা হিসাবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল ফেলে দেওয়া লোহালক্কর কেনা ব্যবসয়ায়ীদের কাছে। এর আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি বিহারে।

ছয়, ট্রেন চুরি বিহারে একটি ট্রেনের ইঞ্জিনও চুরি করে নিয়েছিল চোরেরা। ডিজেলচালিত সেই ইঞ্জিন মেরামতির জন্য পাঠানো হয়েছিল বারাউনিতে। সেখান থেকেই চোরেদের একটি দল ইঞ্জিন নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

গত রবিবারের সেতু ভাঙার ঘটনা এই আজগুবি চুরির তালিকা আরও একটু দীর্ঘায়িত করল।
**এসব তথ্য সংগৃহীত হয়েছে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন